প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: '২০২১ সালে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপ থেকে ফয়েজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি প্রথম ফেসবুক লাইভে আসেন। ওই লাইভ থেকেই গুজবের ডালপালা নানান দিকে ছড়াতে শুরু করে। মণ্ডপের দিকে লাঠিসোঁটা নিয়ে উত্তেজিত মানুষ এগোচ্ছেন- এমন একটি জটলার ভিডিওতে একজনকে একাধিকবার বলতে শোনা যায়, 'লাইভ করে দাও,' 'লাইভ করে দাও।'
একই বছর রাজধানীর পল্লবীতে সন্তানের সামনে সাহিন উদ্দীনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এটি নোয়াখালীতে যতন সাহা হত্যার ভিডিও বলে প্রচারের ঘটনাও ঘটে। ওই ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে রতন শীল ও ঢাকার বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষক রুমা সরকারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।'
'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য, এসব ঘটনার উদ্দেশ্য ছিল- বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের কাছে নেতিবাচক বার্তা দেওয়া। দেশবিরোধী একটি চক্র সাইবার স্পেসে গুজব রটিয়ে দেশে অস্থিতিশীল সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।'
-সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে এ ধরনের শতাধিক আইডি চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা পরবর্তী সময়ে যাতে 'অপপ্রচার' চালাতে না পারে, সে জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কার্যক্রম শুরু করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ধারা ৮(১) ও (৩) অনুসারে এসব ব্লক করার জন্য বিটিআরসির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
-তিনি আরও বলেন, মানুষ এখন ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে ফেসবুকে ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে মানুষ ফেসবুকও এখন বিশ্বাস করে না। মানুষ বিশ্বাসের আগে তথ্য ও যুক্তিটা জানতে চায়। কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে অপপ্রচারের বিচার চান, তাহলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-সূত্র জানায়, 'বাংলাদেশে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে। ধর্মীয় ইস্যু ও গুজব দ্রুত ছড়িয়ে সহিংসতা সৃষ্টিতে ফেসবুক ব্যবহার করা হয়।'
ফেসবুকে 'অপপ্রচারকারী' শতাধিক আইডি শনাক্ত: গোয়েন্দা সংস্থা
-সংশ্নিষ্ট সূত্র বলছে, জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক গুজব বেশি চলে। তবে ধর্মীয় ইস্যুতে গুজব ছড়ানোর ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বেশি বাড়ছে। ২০১৭ সালে প্রচারিত গুজবের ৫ শতাংশ ছিল ধর্মীয়, ২০২০ সালে এই হার ৪০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। আবার উগ্রবাদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার হয় ৮২ শতাংশ। উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার ঘটনা বিভিন্ন সময়ে বেড়েছে। সে ক্ষেত্রে সামাজিক শিক্ষিত তরুণ বা ছাত্রদের উদ্বুদ্ধ করার একটি বড় ক্ষেত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বৃহৎ একটি অংশ উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকছে।
'২০১৬ সালে উগ্রবাদীদের মঞ্চ দাওয়ালিল্লাহ ফোরামের সদস্য সংখ্যা ছিল সাড়ে ৫০০। তিন বছর পর এই সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার হয়। শুধু মুসলমান নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে উগ্রবাদের চর্চা করছেন। দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো কোনো পেজ চালানো হচ্ছে। এই পেজের বাংলাদেশীয় অনুসারীর সংখ্যাও নেহাত কম নয় বলে জানা গেছে।'